কিডনি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন
আমাদের শরীরে যে সকল গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ রয়েছে কিডনি এদের মধ্যে অন্যতম। কিডনি রোগ আমাদের শরীরে নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করে। কিডনির কার্যক্ষমতা ৮০% হারানোর পর আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের কিডনি রোগের সমস্যা দেখা দেয়। ফলে পরবর্তীতে চিকিৎসকদের আর কিছু করার থাকে না।
ডাক্তার মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, কিডনি রোগের প্রধান কারণ হলো ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও গ্লোমেরুনেফ্রাইটিস রোগের উপসর্গ। এসকল রোগ আমদের শরীররে দীর্ঘদিন স্থায়িত্বের কারণে কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
ভূমিকা
বাংলাদেশে প্রায় দুই কোটি মানুষ কিডনি রোগে ভুগছে যাদের চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। এদের মধ্যে ২৫% রোগীর চিকিৎসার সামর্থ্য নেই। এমনকি কিডনি বিকল রোগীদের শতাংশই ব্যর্থ হচ্ছেন প্রয়োজনীয় হেমোডায়ালাইসিস ও কিডনি প্রতিস্থাপনে। এজন্যে আমাদের উচিত কিডনি সুস্থ ও সরল রাখা এবং কিডনি যাতে সুস্থ থাকে সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ। করা আসুন জেনে নেই কিডনি রোগের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে।
প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডাক্তার মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, কিডনি নিয়োগের প্রধান কারণ হলো ডায়াবেটিস, উৎসব রক্তচাপ গ্লোমেরুনেফ্রাইসি। কিডনি রোগের উপসর্গ সাধারণত কিডনি কার্যক্ষমতা ৮০% হারানোর পর দেখা দেয়, যা চিকিৎসার জন্য দেরি করে ফেলে। ফলে এ সময় কিডনি রোগের চিকিৎসা তেমন কোনো সুফল পাওয়া সম্ভব হয় না।
মানবদেহে কিডনির কাজ
মানবদেহে কিডনি গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। আমাদের দেহে কিডনি মূলত কাজ হচ্ছে শরীরের সমস্ত রক্ত পরিশোধন করে দূষিত বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়া। হার্ট রক্তকে কিডনিতে পৌঁছে দিচ্ছে এবং কিডনি সেই রক্ত পরিশোধন করে আবার হার্টে পৌঁছে দিচ্ছে। এভাবেই কার্যপ্রক্রিয়া সব সময় চলতে থাকে। কিডনির পরিশোধিত এই রক্ত শরীরের সর্বাঙ্গে পৌঁছে যাচ্ছে এবং শরীরের শক্তি দিচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে একটি কিডনি দিনে ১২০ থেকে ১৫০ লিটার রক্ত পরিশোধিত করে এবং দেড় লিটার থেকে ২ লিটার দূষিত বর্জ্য শরীর থেকে বের করে দেয়। সেটা খাবার হোক, পানি হোক, লবণ হোক কিংবা দূষিত যে কোন বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে বের করে দেয় কিডনির কাজ। আমাদের শরীরে যেসকল বর্জ্য পদার্থ তৈরি হয় তার প্রায় ৯৫ ভাগ বর্জ্য পদার্থ প্রসবের মাধ্যমে বের হয়। বাকি বর্জ্য পদার্থ শরীরের ঘাম বা পায়খানার মাধ্যমে বের হয়।
কিডনিকে সুস্থ রাখার জন্য আমাদের উচিত প্রতিদিন তিন থেকে চার লিটার পর্যন্ত পানি পান করা। কিডনি প্রয়োজনীয় পানি রেখে বাকিগুলো বজ্র আকারে শরীর থেকে বের করে। এ পানির সাথে শরীরের দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়।
কিডনি রোগ কিভাবে হয়
মানুষদের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গুলোর মধ্যে কিডনি অন্যতম। কিডনির মাধ্যমে আমাদের শরীরের বর্জ্য পদার্থগুলো বের হয়ে যায়। আমাদের প্রসবের রাস্তা, প্রসবের থলি, এবং প্রসবের রাস্তায় সমস্ত কার্য প্রক্রিয়াকে নিয়ে কিডনির কাজ। কিডনি আমাদের শরীরে রক্ত জন্য একপ্রকার হরমোন তৈরি করে। এটিকে বলে এরিথ্রোপোটিন।
যখন কিডনি অসুস্থ হয়ে যায় তখন এই হরমোন তৈরি কমে যায়। যার ফলে রক্তশূন্যতা তৈরি হয় এবং হার্ট ফেইলিউর হয় এবং ক্ষুধা মন্দা হয়, যার কারণে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে যায়। শরীরের বর্জ্য পদার্থ গুলো বিভিন্ন অঙ্গে জমা হয়, যার কারণে শরীর ফুলে যায় ,প্রসবের সমস্যা হয় এবং উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যায়। যার ফলে আস্তে আস্তে কিডনি ড্যামেজ হতে থাকে। কিডনি ৮০% কার্যক্ষমতা হারানোর পর আমাদের শরীরে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। ফলে সেই সময় চিকিৎসকদের আর কিছু করার থাকে না।
কিডনি রোগের কারণ
কিডনি রোগের ৮০% কারণ অনেকেরই অজানা। কিডনি রোগের সমস্যার প্রধান কারণ সম্পর্কে যতটুকু জানা গেছে তার মধ্যে প্রধানত কারণ আছে ডায়াবেটিস, দ্বিতীয়ত উচ্চ রক্তচাপ এবং নেফ্রাটাসিস অন্যতম।
এছাড়াও আরো অনেক কারণ থাকতে পারে যেগুলোর কারণে কিডনি রোগ হতে পারে। আসল জেনে নেই কিডনিতে রোগ হওয়ার কয়েকটি কারণসমূহ।
কিডনি রোগের কিছু সাধারণ কারণ হতে পারে:
১. বাহ্যিক দুষণঃ কিডনি রোগের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো বাহ্যিক দুষণ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি কিডনির দুষণ এবং সংক্রান্ত রোগের কারণ হতে পারে।
২. অস্বাস্থ্যকর আহারঃ অতিরিক্ত ক্যালোরি, চিনি, ও তেল ভোগ করা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য নেওয়া হতে পারে কিডনির সংক্রান্ত রোগের কারণ।
৩. অস্বাস্থ্যকর জীবান্ত প্রক্রিয়াঃ কিডনির জীবান্ত প্রক্রিয়া ব্যাকুল হলে কিডনির রোগের কারণ হতে পারে।
৪. পরিবারের ইতিহাসঃ কিডনির রোগ পরিবারের ইতিহাসে বিদ্যমান হলে কিডনির সংক্রান্ত রোগের সম্ভাবনা বাড়ে।
৫. অন্যান্য রোগঃ কিছু কিছু অন্যান্য রোগ যেমন ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন এবং ক্যান্সার কিডনি রোগের কারণ হতে পারে।
৬. ওষুধঃ আমাদের শরীরে কিডনি রোগের অন্যতম কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে অতিরিক্ত ওষুধ সেবন করা। আমাদের শরীরে কোন অংশে একটু ব্যথা হলে আমরা ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খেয়ে থাকি। যা আমাদের শরীরে ম্যাজিক এর মত কাজ করে কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা এই কারণে আমাদের কিডনি ড্যামেজ হচ্ছে।
৭. উচ্চ রক্তচাপঃ কিডনি রোগের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ। উচ্চ রক্তচাপের কারণে ক্ষুদ্র রক্তনালীগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়।
আপনার কিডনির সমস্যা কী স্তরে রয়েছে তা জানার জন্য একজন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা সবচেয়ে ভালো। আপনি কি কিছু নির্দিষ্ট সমস্যা সম্পর্কে জানতে চান?
কিডনি রোগের লক্ষণ
কিডনি রোগ আমাদের শরীরে নীরব ঘাতক হিসেবে বাস করে। কিডনি ৫০ ভাগ নষ্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের শরীরে কিডনি রোগের কোন লক্ষণ দেখা দেয় না। তার পরেও আমাদের শরীরে কিডনি রোগের যে সকল লক্ষণ গুলো দেখা দেয় তারা আলোচনা করা হলো।
১. কিডনি রোগের সমস্যা হলে আমাদের শরীর, মুখমণ্ডল এবং হাত-পা ফুলে যায়
২. কিডনি রোগ হলে প্রসাবের পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে। যেমন ডায়াবেটিস রোগীদের প্রসবের পরিমাণ বেড়ে যায়।
৩. খাবারের অরুচি, বমি বমি ভাব ও রক্ত শূন্যতা দেখা দেয়
৪. কিডনির সমস্যা হলে কোমরে দুই পাশে ব্যথা হয় এবং এ ব্যথা তলপেটেও হতে পারে
৫. কিডনির সমস্যা হলে শরীরে শক্তি কমে যায় এবং কোন কাজ করার প্রতি আগ্রহ থাকে না।
৬. শরীরে উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়
৭. প্রসাবের সাথে রক্ত বা পুজ আসে এবং প্রসব দুর্গন্ধ যুক্ত হয়
৮. কিডনি সমস্যায় প্রসাবে অতিরিক্ত ফেনা হয়
৯. কিডনির সমস্যা হলে চর্মরোগ সারায় শরীর অতিরিক্ত পরিমাণে চুলকায়
১০. কিডনি রোগের কারণে শরীর থেকে বজ্র পদার্থ শরীর থেকে বের হতে না পারায় শরীরে চুলকানি এবং র্যাশ হতে পারে।
উপরোক্ত এই কারণগুলো যখন কোন মানুষের শরীরে লক্ষণ করা যায় তখন বুঝতে হবে তার কিডনি সমস্যা হয়েছে। এ সমস্যাগুলো দেখা দিলে অবশ্যই উচিত হবে দ্রুত কোন কিডনি বিশেষজ্ঞের সাথে সাক্ষাৎ করা এবং চিকিৎসা নেওয়া।
কিডনি রোগ প্রতিরোধের উপায়
কিডনি রোগ এমন একটি রোগ যে রোগ সহজেই কেউ বুঝতে পারে না। যখন বুঝতে পারে তখন তার কিডনি প্রায় ৫০% নষ্ট হয়ে গেছে। আর সে সময় বুঝেও কিছু করার থাকে না। এজন্য আমাদের উচিত জীবনে কিছু নিয়ম মেনে চলা এবং খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন আনা। তাহলে আমরা কিডনি রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হব। এছাড়াও যারা কি কিডনি রোগে ভুগছেন আসুন জেনে নেই কিভাবে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করার যায়।
- কিডনি রোগ প্রতিরোধে ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
- চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ সেবন করা থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে ব্যথার ওষুধ এবং এন্টিবায়োটিক খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- কিডনি রোগ হলে অল্প থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বা চিকিৎসা নেন।
- যৌন মিলনের পর গোপনাঙ্গ ভালোভাবে পরিষ্কার করে রাখুন।
- নেফ্রাইটিস থাকলে দ্রুত চিকিৎসা নিন।কোন কারণ ছাড়াই ডায়রিয়া ও বমি হলে দ্রুত চিকিৎসা নিন।
- সব সময় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার এগিয়ে চলো।
- নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
- শরীরের ওজন সব সময় নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন।
- নেশা জাতীয় দ্রব্য যেমন, ধূমপান, মদ্যপান ইত্যাদি থেকে বিরত থাকুন।
- প্রেসার পায়খানা যথাসময়ে করুন।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
উপরোক্ত এই বিষয়গুলো মেনে চলুন অবশ্যই উপকার পাবেন ইনশাআল্লাহ। এছাড়া যাদের ডায়াবেটিস, উৎসে রক্তচাপ, শরীরের ওজন বেশি যাদের, এবং যারা অতিরিক্ত লবণ খান, যারা মাদকদ্রব্য সাধন করে, এবং যাদের বংশগতভাবে কিডনি রোগের সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই বছরে দুইবার কিডনি পরীক্ষা করেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলার চেষ্টা করুন।
কিডনি রোগের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলার চেষ্টা করুন। তাহলে আল্লাহতালা চাইলে আপনি অবশ্যই কিডনি রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
কিডনি সুস্থ রাখতে যে সকল খাবার খাবেন
কিডনি মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। কিন্তু বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ কেমিক্যালযুক্ত ভেজাল খাবার ও পরিবেশ দূষণ ইত্যাদি কারণে সারা বিশ্বে কিডনি রোগের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
কিডনি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন রকমের পরামর্শ দিয়ে আসছে। বিশেষ করে খাবার তালিকা পরিবর্তন আনার উপরে জোর দিচ্ছে। কিডনি ভালো রাখতে সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, প্রোটিন ও সোডিয়াম জাতীয় খাবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ যা আপনার কিডনি ভালো লাগবে। আজকে আপনাদের সামনে এমন কিছু খাবারের কথা বলব যেগুলো খাওয়ার ফলে আপনার কিডনি অনেক সুস্থ ও ভালো থাকবেন ইনশাল্লাহ।
কিডনি সুরক্ষায় আপনি খেতে পারেন স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, আপেল, মিষ্টি আলু, পাতাকপি, সবুজ শাকসবজি, মাছ, আনারস, রসুন, লাল মরিচ, বাঁধাকপি, পেঁয়াজ, ডিমের সাদা অংশ, শালগম, চামড়া বিহীন মুরগি, বাদামি চাল,দুগ্ধ জাতীয় খাবার, মাশরুম এবং প্রচুর পরিমাণে পানি ইত্যাদি।
উপরোক্তই খাবার গুলো আমাদের শরীরে কিডনি রোগের সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে এবং শরীরকে রাখবে সুস্থ ও স্বাভাবিক। আমাদের এমন কোন খাবার খাওয়া উচিত নয় যা খেলে আমাদের শরীরের ক্ষতি এবং শরীরের কোন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কিডনি সুরক্ষায় যে সকল খাবার খাওয়া উচিত নয়
কিডনি আমাদের শরীরে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। কিডনি আমাদের শরীরের সমস্ত বজ্র পদার্থ বের করে দিয়ে শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে। কিডনি প্রেসাবের মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে সমস্ত ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয়। এছাড়াও কিডনি রক্ত পরিষ্কার করে আমাদের শরীরে শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এ সকল কারণে কিডনি সুস্থ সবল রাখা আমাদের অবশ্যই উচিত।
এমন সব খাবার আছে যে খাবারগুলো আমাদের শরীরের পাশাপাশি কিডনিরও মারাত্মক ক্ষতি করে। আমরা অনেকেই জানিনা কোন কোন খাবারগুলো আমাদের কিডনির জন্য অনেক ক্ষতিকর। কিডনি সুরক্ষায় আমাদের এ সকল খাবার পরিহার করে চলা উচিত। আসুন জেনে নেই কিডনি সুরক্ষায় আমাদের কোন কোন খাবার গুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
প্রক্রিয়াজাতকরণ খাবারঃ প্রক্রিয়াজাত খাবার আমাদের কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আমরা প্রায়ই দেখে রাস্তাঘাটে বা হোটেলে বিভিন্ন রকমের ফাস্টফুড ও প্রক্রিয়াকরণ খাবার মানুষ আর হামেশাই খাচ্ছেন, যেমন বার্গার, পিৎজা, চপ ,সিঙ্গারা ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের আইটেম যা আমাদের শরীরে পাশাপাশি কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতি হয়। কিডনি সুরক্ষায় এই খাবারগুলো পরিহার করে চলা উচিত।
উচ্চ সোডিয়ামযুক্ত খাবারঃ সোডিয়াম যুক্ত খাবার আমাদের শরীরের জন্য ভালো কিন্তু উচ্চ সোডিয়ামযুক্ত খাবার কিডনির জন্য ভালো নয়। যেমন বিভিন্ন প্রকারের স্যুপ, কোলড্রিংকস, বিভিন্ন প্রকারের আচার ইত্যাদি তে উচ্চমাত্রায় সোডিয়াম থাকে যা আমাদের কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
চিনি যুক্ত খাবারঃ যে সকল খাবারে অতিরিক্ত পরিমাণ চিনি থাকে সে সকল খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার কিডনির জন্য ভালো নয়। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খেলে ডায়াবেটিস ওবেসিটির দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর।
এছাড়াও আরো অনেক খাবার আছে যেগুলো অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিডনি সমস্যা হতে পারে।যেমন,
- কিডনি রোগীদের যেসব সবজি খাওয়া যাবে না সেগুলো হলো সজনে, কচু, পুঁইশাক, পালং শাক, বরবটি, ধনেপাতা মিষ্টি আলো ইত্যাদি।
- কিডনি রোগীদের যেসব ফল খাওয়া যাবে না সেগুলো হলো, কলা, বড়ই ,কাঁঠাল কামরাঙ্গা, পাকা আম, লেবু, আনার, কমলালেবু, আনারস ইত্যাদি।
- কিডনি রোগীদের যেসব খাবার বাদ দিতে হবে সেগুলো হলো, বিভিন্ন প্রকার ডাল, বাদাম, কাজুবাদাম, শুকনা ফল, খেজুর, ও বিচি জাতীয় খাবার ইত্যাদি এছাড়াও নারিকেলের তৈরি খাবার খাওয়া যাবে না এবং নারিকেলের পানি খাওয়া বাদ দিতে হবে।
- বিভিন্ন প্রকার মাংস যেমন গরু, আসে, ভেড়া এদের কলিজা, মগজ ইত্যাদি। সামুদ্রিক মাছ ও মাছের ডিম, এমনকি চিংড়ি মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- অতিরিক্ত লবণ দিয়ে যে সকল খাবার তৈরি হয় যেমন চিপস, আচার, ছুটকি, অর্থাৎ যে কোনো প্রকারের ফাস্টফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এগুলো কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
লেখকের মন্তব্য
কিডনি রোগ আমাদের দেহে জন্য এটি নীরব ঘাতক। কিডনি রোগের চিকিৎসা আমাদের দেশে অনেক ব্যয়বহুল। অর্থের অভাবে অনেকে এর রোগের চিকিৎসা করাতে ব্যর্থ হন। এজন্য আমাদের সকলকে উচিত স্বাস্থ্য সচেতনতা মেনে চলা। এবং সব সময় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা।
প্রিয় বন্ধুরা, আজকে আমরা কিডনি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সক্ষম হয়েছে। কিডনি রোগ সম্পর্কে আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্টসের মাধ্যমে জানাবেন। ভালো লাগলে পাশে থাকবেন এবং শেয়ার করে অন্যদেরকে পড়ার সুযোগ করে দেবেন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url