মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

 

 ব্যাঙের ছাতার মত দেখতে মাশরুম অনেকেই খেতে চান না বা অনেকের কাছেই অপছন্দের একটা খাবার। অথচ মাশরুম একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সবজি। এটি মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এজন্য সারা বিশ্বে মাশরুম একটি জনপ্রিয় খাবারে পরিণত হয়েছে।

মাশরুম-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা-সম্পর্কে-বিস্তারিত-জানুন
আপনি কি জানেন মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। সারা বিশ্বে মাশরুম কেন এত জনপ্রিয় খাবার। মাশরুম খেলে আমরা কি কি উপকার পেতে পারি। আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে আসুন জেনে নেই মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

ভূমিকা

বর্তমান বিশ্বে মাশরুম জনপ্রিয় ও প্রসিদ্ধ খাবারের মধ্যে উন্নতম। কিন্তু আমাদের দেশে মাশরুম সম্পর্কে সঠিক ধারণা অনেকেরই অজানা। মাশরুম কি, এটা কিভাবে খেতে হয় এর স্বাস্থ্য উপকারিতায় বা কি রয়েছে, এটি খেলে শরীরের কি কি উপকারে আসে অপকারি বা কি হয় আমরা অনেকেই সেটা জানিনা। আসুন জেনে নিই মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

বর্তমান বিশ্বে মাশরুম একটি জনপ্রিয় খাবার। মাশরুমে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি।মাশরুমে থাকা প্রোটিন মানবদেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাশরুমে থাকে পলিফেনল ও সেলেনিয়াম নামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মানব দেয়ার জন্য অত্যন্ত কার্যকারী। তাছাড়া অনেক পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মাশরুম মানবদেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আপনি হয়তো ভাবছেন মাশরুম সত্যিই কি মানবদেহের জন্য উপকারী। এজন্য আসুন জেনে নিই মাসুম খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি।


রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক রকমের খাবার রয়েছে এর মধ্যে মাশরুম অন্যতম। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ফিভার বা আশ এবং কম পরিমাণ রয়েছে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম রয়েছে প্রচুর পরিমাণে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।

ডায়াবেটিসঃ শর্করা ও ফ্যাট জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। মাশরুমে শর্করা ও ফ্যাট অনেক কম এবং ফাইবার বা আশ বেশি থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি আদর্শ খাবার। নিয়মিত মাশরুম খেলে ব্লাড সুগার অনেক আংশে তুমি আনা সম্ভব।

ক্যান্সারে ঝুঁকি কমায়ঃ মাশরুমে রয়েছে পলিফেনল ও সেলেনিয়াম নামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও সালফার। যা মানব দেহের মারাত্মক কিছু রোগ , যেমন-স্ট্রোক, স্নায়ুতন্ত্রের রোগ ও ক্যান্সার থেকে মুক্তি লাভ করে এবংমানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ত্বক সুস্থ রাখতেঃ মানুষের ত্বক ভালো রাখতে মাশরুম অত্যন্ত উপকারী। মাশরুমের মধ্যে রয়েছে নিয়াসিন ও রিবোফ্লাবিন যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত কার্যকারী। মাশরুমের মধ্যে রয়েছে ৮০-৯০ ভাগ পানি যা ত্বককে নরম ও কোমল রাখে ।

ওজন নিয়ন্ত্রণঃ মাশরুমে রয়েছে ফাইবার বা আঁশ যা পাকস্থলী দীর্ঘ সময় ভরা রাখে। মাশরুম রক্ত চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা রাখে। যার ফলে মাশরুম খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ ভিটামিন ও মিনারেল এর প্রধান কাজ হল মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব হলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, হলে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। প্রাকৃতিকভাবে শুধুমাত্র মাশরুমে সবথেকে বেশি ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। এছাড়াও মাশরুমে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম ও সেলেনিয়াম।

সেলেনিয়াম এমন একটি উপাদান যা শুধু মাছের মধ্যে পাওয়া যায়। মাসুমের মধ্যে রয়েছে এরগোথিওনেইন নামের শক্তিশালী একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মানুষের জন্য ঢালের মতো কাজ করে। মাশরুমের হয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ১২ অন্য কোন উদ্ভিদে নেই। এ সকল উপাদান মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।

কোলেস্টেরল কমাতেঃ মাশরুম কোলেস্টেরল কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। কোলেস্টেরল কমানোর অন্যতম উপাদান ইরিটাডেনিন, লোভাস্ট্টিন, এ টাডেনিন, কিটিন, ও ভিটামিন বি, সি ও ডি মাশরুমে বিদ্যমান। এগুলো মানুষের শরীরে কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে।

ধাত ও হাড়ের গঠনেঃ মাশরুমের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম ফসফরাস ও ভিটামিন ডি। যেগুলো বাচ্চাদের দাঁত ও হাড় গঠনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
মাশরুম এমন একটি পুষ্টিগণ সম্পূর্ণ খাবার যেটি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। মাশরুমে কোলেস্টেরলের পরিমাণ শূন্য, একটি খেলে ফ্যাট কমতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ভূমিকা রাখে, মেদ কমাতে সাহায্য করে, হেপাটাইটিস বি ও জন্ডিস রোগ প্রতিরোধ করে, চোখের দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে ইত্যাদি।

মাশরুম খাওয়ার অপকারিতা

আমরা এত সময় মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অবশ্যই জানতে পেরেছি। এটা সর্বাপেক্ষা বলা যায় যেতে পারে যে মাশরুম অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ও মানব দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। মাশরুমের মধ্যে মানবদেহের জন্য তেমন কোনো অপকারিতা বা ক্ষতি নেই। তবে সব মাশরুম স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।

যাদের শরীরে এলার্জি আছে ও হজমের সমস্যা আছে তারা মাশরুম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ মাশরুম খেলে আপনার হজমের সমস্যা হতে পারে। যাদের শরীরে এলার্জি রয়েছে তাদের মাশরুম না খাওয়াই ভালো। মাশরুম হচ্ছে একটি ছত্রাক জনিত প্রোটিন, এজন্য যাদের কিডনির সমস্যা আছে তারা এটি খাবেন না।

আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে একটা ভুল ধারণা রয়েছে ,যে তারা মনে করে মাশরুম হচ্ছে ব্যাঙের ছাতার যেগুলো বন জঙ্গলে জন্মায়। এগুলো মাশরুম, তবে এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারী ধাতব ও অন্যান্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক সেগুলো মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

কিছু কিছু মাশরুম যেগুলো কাঠের গুড়ি, খড়, ডোবা নালা, প্রভৃতি স্থানে জন্মায় সেগুলো মানুষের জন্য ক্ষতিকর। বিষাক্ত মাশরুম কখনো প্রখর রোদে জন্মায় না। যে সকল মাশরুম অম্ল গন্ধযুক্ত ঝাঁঝালো প্রজাতির সেগুলো অনেক বিষাক্ত থাকে। এজন্য আমাদের উচিত অর্গানিকভাবে বা চাষাবাদের মাধ্যমে যে সকল মাশরুম উৎপাদন করা হয় সেগুলোকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা।

ওয়েস্টার মাশরুম এর উপকারিতা

সামগ্রিকভাবে বলা যেতে পারে যে ওয়েস্টার মাশরুম একটি পুষ্টিকর এবং বহুমুখী খাবার যার মধ্যে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুবিধা বিদ্যমান। ওয়েস্টার মাশরুমের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ উপাদান, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ। ওয়েস্টার মাশরুম ক্যান্সার ও হৃদরোগের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এমনকি শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
ওয়েস্টার-মাশরুম-এর-উপকারিতা
আসুন ওয়েস্টার মাশরুম খাওয়ার ফলে আমরা আর কি কি উপকারিতা পেতে পারি।বিশ্বব্যাপী ওয়েস্টার মাশরুম একটি জনপ্রিয় খাবার। মাশরুমে রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা, সুস্বাদু স্বাদ এবং বহুমুখী রন্ধনশিল্প। বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে ওয়েস্টার মাশরুমের কয়েকটি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনা করা হলো। ওয়েস্টার মাশরুম পুষ্টির মহ উৎস।

এটির মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আর কম পরিমাণে ক্যালরি। যা স্বাস্থ্য , ত্বক, চোখ, এবং স্নায়ুতন্ত্র ভালো রাখতে বিশেষ সহায়ক। এছাড়াও কপার, আয়রন এবং জিংক এর মত খনিজ ওয়েস্টার মাশরুমে বিদ্যমান যেগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, লাল রক্ত কণিকা বৃদ্ধি ঘটায় এবং শরীরের ক্ষত নিরাময় ভূমিকা রাখে।

ওয়েস্টার মাশরুমে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দীর্ঘস্থায়ী রোগ যেমন ক্যান্সার ও হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।যারা মরণব্যাধি ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন তাদের জন্য ওয়েস্টার মাশরুম অত্যন্ত কার্যকরী। ওয়েস্টার মাশরুমের মধ্যে রয়েছে ১৮% পর্যন্ত ফাইবার বা আশ যা ইনসুলিন এর মাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।

তাছাড়া ডায়াবেটিস রোগের কারণে রোগীকে অনেক খাবার থেকে বঞ্চিত হতে হয়, ফলে ডায়াবেটিস রোগী পুষ্টিহীনতায় ভোগে এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এজন্য রোগীকে অবশ্যই ওয়েস্টার মাশরুম খাওয়া প্রয়োজন।

ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা উঠানামা করে ফলে তাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ওয়েস্টার মাশরুম গুলোকে যে মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে যে ওয়েস্টার মাশরুম প্রিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে। শরীরের ব্যাকটেরিয়া পরিবর্তনের সহায়তা করে যা ব্লাড, সুগার ও লিভার উন্নত করতে সাহায্য করে।

সুতরাং বলা যেতে পারে ওয়েস্টার মাশরুমে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা সহ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং সুস্বাদু। ওয়েস্টার মাশরুম খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এটি যে কোন বয়সের মানুষের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

মাশরুম পাউডার খাওয়ার উপকারিতা

খাদ্য হিসেবে মাশরুমের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাচীনকাল থেকেই মাশরুম একটি দামি খাবার ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। মাশরুমকে প্রোটিনের আধার বলা হয়ে থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে( ২০-৩০) গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। তাছাড়া রয়েছে ভিটামিন সি্‌ বি কমপ্লেক্স, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, কুম মাত্রায় রয়েছে ক্যালসিয়াম ও লৌহ। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসুন জেনে নিই মাশরুম পাউডার খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা
মাশরুম পাউডার এবং কাঁচা হলুদ শরীরের হরমোন ব্যালেন্স নিয়ন্ত্রণ করে এবং পিরিয়ড নিয়মিত করতে সাহায্য করে। আপনি যদি মাশরুম পাউডার ও কাঁচা হলুদ একত্রে মিশিয়ে খান তাহলে এটি জরায়ুর মাংসপেশী সংকোচন ও প্রসারণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং পিরিয়ডে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

আপনি যদি নিয়মিত দুই চামচ মাশরুম পাউডার খান তাহলে ১৫-২০ দিনের মধ্যে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। ফলে আপনাকে আর পুষ্টিহীনতায় ভোগা লাগবে না এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

আপনি যদি নিয়মিত তিন চামচ করে মাশরুম পাউডার খেতে পারে তাহলে ৬ মাসের মধ্যে আপনার শরীরে বাড়তি মেদ কমিয়ে আপনাকে সুন্দর একটা শরীর উপহার দেবে। আপনি পাবেন সুস্থ ,সুন্দর ও ফিটনেস একটি জীবন।

মাশরুম কি ঔষধি সবজি

ঔষধি গুণে পরিপূর্ণ সবজির মধ্যে মাশরুম হল এমন একটি সবজি যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যেমন ডায়াবেটিকস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ক্যান্সার ও টিউমার, জন্ডিস, এইডস, প্রভৃতি রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত মাশরুম খেলে শারীরিক ও মানসিক শক্তি অনেকাংশেই বৃদ্ধি করে।

মাশরুমের পুষ্টিগুণ

প্রতি১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে প্রোটিন২৫-৩০%, ফ্যাট৪-৬%, ভিটামিন ও খনিজ৫৫-৬০% এবং কার্বোহাইড্রেট৫-৬% রয়েছে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হোটেল বা রেস্টুরেন্টে মাশরুমকে সবজি হিসেবে খেয়ে থাকে। অতি প্রাচীনকাল থেকে মাশরুমে সুস্বাদ এর কারণে খাদ্য তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
মাশরুমের-পুষ্টিগুণ
বর্তমান সময়ে অনেক দেশেই অতিথি আপ্যায়নের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় অনেক সুস্বাদু মাশরুম। এজন্যে অনেক ভোজন রসিকেরা মাশরুমের স্বাদকে মাংসের সাথে তুলনা করেছেন। সেজন্যেই মাশরুমকে বলা হয়ে থাকে সবজি মাংস। নিম্নে মাশরুমের কয়েকটি ঔষধি গুনাগুন আলোচনা করা হলো যেমনঃ
  • গর্ভবতী মা ও শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • মাশরুম বহুমূত্র রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
  • নিয়মিত মাসরুম খেলে নানান ধরনের চর্মরোগ ভালো হয়।
  • মাশরুমে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকায় উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
  • মাশরুমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন ডি যা শিশুদের দাঁত ও হাড় গঠনে ভূমিকা রাখে।
  • মাশরুমের মধ্যে রয়েছে ল্যামপট্রল টারপিনয়েড ও বেনজো পাইরিন যা টিউমার ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
  • বর্তমান বিশ্বে ক্যান্সার প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে মাশরুম। কারণ মাশরুমের মধ্যে রয়েছে ট্রাইটারপিন যা ক্যান্সারের প্রতিষেধ ভূমিকা রাখে।
  • মাশরুমের মধ্যে রয়েছে ইলুডিন এম ও এস যা আমাশয় রোগীদের জন্য অনেক উপকারী।
  • নিয়মিত মাশরুম খেলে চুল পড়া ও চুল পাকা প্রতিরোধ করা সম্ভব। কারণ মাশরুমের মধ্যে রয়েছে অ্যামাইনো এসিড যা চুল পড়া ও চুল পাকা রোধ করে।
  • মাশরুমের মধ্যে রয়েছে খনিজ লবণ যা চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে ভূমিকা রাখে।
  • উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা সাপেক্ষে আপনার খাদ্য তালিকায় মাশরুম রাখুন। এই মাশরুম আপনারা খাবারের তালিকাকে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এবং আপনার জীবনকে আকর্ষণীয় করে তুলবে।

মাশরুম খাওয়া কি হালাল না হারাম

বর্তমান বিশ্বে মাশরুম একটি পরিচিত নাম। সুস্বাদু সবজি হিসেবে মাশরুম অনেক সুনাম রয়েছে। কারণ মাশরুম হচ্ছে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি খাবার। এই মাশরুম এর মধ্যে রয়েছে অনেক ঔষধি গুণাগুণ। এ কারণে সারা বিশ্বে মাশরুম একটি জনপ্রিয় ও চাহিদা সম্পন্ন খাবার। কিন্তু আমাদের দেশে মাশরুমের প্রচলন বেশি দিনের নয়, যার কারণে আমরা এটি খেতে অভ্যস্ত নয়।

মাশরুম অনেকের কাছে পছন্দের একটি খাবার। আবার অনেকেই এদিকে হারাম ভেবে এর থেকে দূরে থাকেন। কারণ অনেকে এটিকে ব্যাঙের ছাতা ভেবে হারাম বলে থাকেন। কিন্তু এ ধারণাটি ভুল, কারণ ব্যাঙের ছাতা ও মাশরুম এক জিনিস নয়। ব্যাঙের ছাতা যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনার মধ্যে অপরিচ্ছন্ন জায়গায় বন জঙ্গলে জন্মে থাকে। হলে এগুলো স্বাস্থ্যসম্মত না এবং এদের অনেকাংশেই বিষাক্ত হয়ে থাকে যা খেলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

কিন্তু যেগুলো অর্গানিকভাবে চাষাবাদের মাধ্যমে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে উৎপাদন করা হয় সেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত। মাশরুম সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর একটি হাদিস রয়েছে। মাশরুমকে বেহেশতি খাবার মান্না-সালওয়ার এর সাথে তুলনা করা হয়েছে বিভিন্ন কিতাবে।

সহি বুখারী শরীফের হাদিস নবী করীম সাঃ বলেন," মাশরুম এক শ্রেণীর মান্না ও এর রস চোখের জন্য ঔষধ বিশেষ"।
মাশরুম উৎপাদনে যদি হারাম ও নাজায়েজ পদ্ধতি অবলম্বন করা না হয় ,এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থানে মাশরুম উৎপাদিত হলে সেটি মানুষের জন্য হালাল ।এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই

মাশরুম খাওয়ার নিয়ম

মাশরুমের যে স্বাদ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তা খুব কম খাবারে মিলে। বাঙালির প্রায় রান্না ঘরে এই খাবারটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমরা বাজার থেকে যে মাশরুম কিনে নিয়ে আসি তা সঠিকভাবে প্রক্রিয়াকরণ হয় না। এজন্য মাশরুম রান্না করার আগে পরিষ্কার ঠান্ডা পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এরপর ছোট ছোট করে কেটে নিন। রান্না করার আগে মাশরুমকে 10 মিনিট ভাপিয়ে নিতে হবে।

বর্তমান বিশ্বে মাশরুম একটি জনপ্রিয় খাবার। মাশরুম সালাত হিসাবে খুবই প্রিয়। তাছাড়া মাশরুমকে বিভিন্ন উপায়ে আমরা খেয়ে থাকি। যেমন মাশরুম স্যুপ, ক্রিম মাশরুম স্যুপ ইত্যাদি। বিভিন্ন সবজির সঙ্গে মাশরুম রান্না করে খাওয়া যায়। মাশরুম পাউডার বানিয়ে খাওয়া যায়। এছাড়াও মাশরুম চিকেন সুপ, মাশরুমের কোপ্তা, মাশরুমের আচার , মাশরুমের চপ ইত্যাদি বানিয়ে আমরা খেতে পারি।

লেখকের মন্তব্য

আজকে আমরা আলোচনা করলাম মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। মাশরুম মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি। মাসুম খাওয়ার ফলে নিশ্চয়ই আমরা বিভিন্ন মারাত্মক রোগের হাত থেকে মুক্তি পাব ইনশাআল্লাহ।

আমার আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে বা উপকারে আসে, তাহলে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিবেন। এবং নিচে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url